এম,এ রউফ সিলেট: আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। একই সঙ্গে এই ছাত্রসংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়ার খবরে সিলেটে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অপর দিকে মাঠে ছাত্রলীগের কোনো প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়নি। তবে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ নিয়ে সরব ছাত্রলীগের অনেক নেতাই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাত্রলীগের গৌরবের ইতিহাস তারা তুলে ধরছেন। ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার বিষয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. নাজমুল ইসলাম বুধবার (২৩ অক্টোবর) দিবাগত রাতে নিজের ফেসবুক একাউন্টে ফের এক স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এতে তিনি লিখেন, ‘তাদের বাপ-দাদার বয়সের চেয়ে বেশি বয়স বাংলাদেশ ছাত্রলীগের। এই দেশ এই মাতৃভাষা এই স্বাধীনতা সর্বোপরি এই বাংলাদেশের ৫৬ হাজার বর্গমাইলের প্রতিটি ইঞ্চি মাটিতে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। সেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নাকি নিষিদ্ধ করেছে কিছু নাবালক।’
এ নিয়ে বুধবার (২৩ অক্টোবর) দিবাগত রাতে নিজের ফেসবুক একাউন্টে এক স্ট্যাটাস দেন সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ। তিনি লেখেন, ‘১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ছাত্র সংগঠনটি পূর্ব পাকিস্তান কিংবা বাংলাদেশ’র জন্য নিতান্তই গর্বের। প্রতিষ্টার পর থেকে রাষ্ট্র ভাষা বাংলার জন্য ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন পর্যন্ত তৎকালীন ছাত্রলীগের অগ্রনী ভূমিকা ইতিহাসের আলোচিত বিষয়।আর সেই ভুমিকা পালন করার জন্যই আজকে সমস্ত দেশের মানুষ বাংলায় কথা বলি গর্বের সাথে।বাংলা কোন দলীয় ভাষা নয়। বর্তমান সময়ের এজেন্টরা ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার প্রধান কারণ হচ্ছে ভয় ভীতি।বিভিন্ন দেশ কিংবা দলের এজেন্ট হয়ে নির্লজ্জ বেহায়ার মত দেশ পরিচালনায় এসে প্রধান কর্মকাণ্ডের মধ্যে ছাত্রলীগের নিষিদ্ধকরণ আপনাদের কাছে অতীব গুরুত্বপূর্ণ, যা কিনা সমস্ত দেশ কিংবা বহিরবিশ্বের জনতার কাছে পরিষ্কার। মনে রাখবেন;অন্য দেশের নাগরিক হয়ে দেশ পরিচালনায় এজেন্ট হিসেবে এসে বেশিদিন ঠিকা যায় না। শুভ বুদ্ধির উদয় হোক,ভয় ভীতি দূর হোক।’
সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি এমদাদ রহমান তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, ‘আমি গর্বিত ছাত্রলীগের একজন কর্মী ছিলাম বলে।’
সিলেট মহানগরের ৫ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সহসভাপতি নাহিয়ান চৌধুরী ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, ‘যারা নিজেরাই অবৈধ তারা কি নিষিদ্ধ করলো তা নিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বিচলিত নয়। ছাত্রলীগ তার গৌরবময় ইতিহাসকে সামনে রেখেই চলবে।
দিরাই সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিটু তালুকদার লিখেছেন, ‘সংগ্রামে, গৌরব,ঐতিহ্য ও সাফল্যে ৭৬ বছর স্বগৌরবে অতিক্রম করছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগ ছিলো, ছাত্রলীগ আছে, ছাত্রলীগ থাকবে। দেশের প্রয়োজনে ছাত্রলীগ তার চীরচেনা রাজপথ দখল নিবে স্বমহিমায় জয় বাংলা স্লোগানে।’
সিলেট ব্লাড ফাউন্ডেশন রক্তদান ও সমাজ কল্যাণ সংস্থার সদস্য মোহাম্মাদ মাসুম আহমদ তালুকদার নামের একজন লিখেছেন, ‘ওরা হয়তো ভুলে গিয়েছে যে ছাত্রলীগের অতীত। সময়ের সাথে পাল্টাতে পারে অনেক কিছু, আমরা রাতের অন্ধকারে পায়ের রগ কাটা কুপিয়ে হত্যা, এসব রাজাকারের দলে, দেখা হবে ইনশাআল্লাহ আবার ও বাংলাদেশের মানুষ কিছুটা বুঝতে পারবে আরো কিছু দিন যাওয়ার পরে।’
গোয়াইনঘাট উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদ লিখেন, ‘ছাত্রলীগের ইতিহাস বাংলাদেশের ইতিহাস। ছাত্রলীগকে মুছতে হলে বাংলাদেশকে মুছতে হবে।’